স্টাফ রিপোর্টার : অপরিকল্পিতভাবে একের পর এক পুকুর খননের কারণে রাজশাহী চারঘাটের বিস্তীর্ণ তিন ফসলি জমি ডুবে আছে জলাবদ্ধতায়। কৃষকরা বলছেন, জমিতে জলাবদ্ধতা স্থায়ীরূপ ধারণ করেছে। ফলে এসব জমিতে কোনো আবাদ করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন উপজেলার কৃষকরা।কৃষকদের অভিযোগ, অপরিকল্পিত ভাবে পুকুর খনন, অবৈধ ভাবে খাল দখল ও কালভার্টের মুখ বন্ধের কারণে ফসলি জমিগুলো পানির নিচে ডুবে আছে। অনেক এলাকার বসত বাড়িতেও জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। কৃষকেরা নালা কেটে বিলের পানি সরানোর চেষ্টা করছেন। তবে তা খুব একটা কাজে আসছে না।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, গেল বর্ষার বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতায় উপজেলার প্রায় ৩৮০ হেক্টর জমিতে চলতি মৌসমে আমন চাষ হয়নি। বিস্তীর্ণ জমি এখনও জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত রয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসন করা খুবই কঠিন।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ অপরিকল্পিত পুকুর খননের কারনে ও গেল বর্ষার অবিরাম বৃষ্টিতে জমিতে জমে থাকা পানি সরে যাওয়ার পথ নেই। অপরিকল্পিত পুকুর খননের কারণে খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিন চারঘাটের ভাটপাড়া, শলুয়া, বালিয়াডাঙা, সাদীপুর, কৈডাঙা, বালুদিয়াড়সহ বেশ কিছু এলাকার বিলে গিয়ে দেখা যায় এখনো পানি থৈ থৈ করছে। ডুবে আছে বিস্তীর্ণ জমি। কোনো আবাদ করা যায়নি।
পুকুর পাড় উঁচু কারার কারনে পানি নিস্কাসন পথ বন্ধ। এ কারণে বিলের পানি নেমে যেতে না পেরে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এসব জমিতে ফসল চাষ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় পুকুরের সংখ্যা এখন ৩ হাজার ৪০২টি। ছয় বছর আগে এ সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৭৬২টি। এক যুগ আগে ছিল ১ হাজার ৯৩০টি পুকুর। এসব পুকুরের অধিকাংশই অবৈধভাবে খনন হয়েছে তিন ফসলি জমিতে।
উপজেলার পাইটখালী এলাকার কৃষক আবু সাঈদ হিরু বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাবশালীদের অবৈধভাবে পুকুর খননের কাছে জিম্মি ছিলো এলাকার কৃষকরা। জমির মালিকদের কাছে থেকে লিজ নিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় বিধি ভেঙ্গে একের পর এক অবৈধভাবে পুকুর খনন করা হলেও কৃষকের কথা চিন্তা করেনি কেউ। ফলে আজ তিন ফসলি জমিতে জমে থাকা পানি বের হতে পারছেন না। এ কারণে দেখা দিয়ে চরম জলাবদ্ধতা।
চারঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন হাসান বলেন, উপজেলার ৬৮০ হেক্টর জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে পানি নিস্কাসন না হওয়ার কারণে। অবৈধভাবে পুকুর খনন এজন্য দায়ি। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে প্রায় ৩৮০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়নি।